আগামীকাল সূর্যাস্তের পরই শুরু হচ্ছে রমজানের শেষ দশক।
শেষ দশকের বেজোড় ২১,২৩,২৫,২৭ ও ২৯ রাতগুলোর মধ্যেই একটি রাত ‘শবে কদর’। যে রাতে ইবাদত করা হাজার মাস বা ৮৪ বছর ইবাদত করা থেকে উত্তম। যার যতটুকু সম্ভব এরাতগুলো জেগে ইবাদত করার চেষ্টা করুন। কমপক্ষে নীচের আমলগুলো অবশ্যই করুন যাতে শবে কদরের ফযীলতের মধ্যে শামিল হতে পারি ইনশাআল্লাহ।
কদরের_রাতে আমল করতে চান, এই নিয়মে করতে পারেন
১। রাত দশটার পর থেকে টিভি বা মোবাইল দেখা থেকে বিরত থাকুন।
২। বেশি গরম লাগলে গোসল করুন ও পরিষ্কার পোষাক পরিধান করুণ।
৩। কোরআন পড়তে পারলে ১২ টার আগ পর্যন্ত কোরআন পড়ুন।
৪। বেশি বেশি নফল আর হাজতের নামাজ পড়ুন।
৫। রাত ১ টা থেকে ২ টা পর্যন্ত জিকির করুন। যেমনঃ-
(১) সুবহানাল্লহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লহু আকবার। (১০০ বার করে)
(২) লা ইলাহা ইল্লাল্লহ (২০০ বার)
(৩) আস্তাগফিরুল্লহ (কমপক্ষে ৫০০ বার, যত বেশি সম্ভব হয়)
(৪)বেশী বেশী দুরুদ পড়া।
(৫) সুবহানাল্লহি ওয়াবিহামদিহি (কমপক্ষে ১০০ বার)
(৬)”লা ইলাহা ইল্লাল্লহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়া হুওয়া আ’লা কুল্লি শাইয়্যিন কদির” (কমপক্ষে ১০০ বার)
(৭) দুয়া ইউনুস – “লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নী কুনতু মিনায্ যলিমীন” ।(যত পারেন)
(৮)”সুবহানাল্লহি ওয়াবিহামদিহি সুবহানাল্লহিল ‘আযীম।” (কমপক্ষে ১০০ বার) ।
(৯) “লা হাওলা ওয়ালা কুওওতা ইল্লা বিল্লাহ” বেশি বেশি পড়তে পারেন।
(১০) সূরা ইখলাস যত বেশি পড়া যায়।
(১১) স্যায়েদুল ইস্তগফার পাঠ করা।
৬। রাত ২ টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত তাহাজ্জুদ পরুন ৮ রাকাত। রুকু ও সিজদায় বেশি সময় ব্যয় করুন।পারলে সিজদায় দোয়া করা।
৭। তাহাজ্জুদের পর তিন রাকাআত বিতরের নামাজ পরুন।
৮। সেহরি খাওয়ার পূর্বেই হাত তুলুন মালিকের কাছে। আপনার প্রয়োজনের সব কিছু খুলে বলুন..একটু চোখের পানি ফেলে বলুন, “মালিক, আমি আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছেই হাত পেতেছি…😭 খালি হাতে ফিরিয়ে দিবেন না…..ইত্যাদি…
৯। সেহরি খান।
১০। ফজরের নামাজ পড়ুন।
উপরের কথাগুলো মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিন, যারা আপনার কথা শুনে এ আমল করবে, আপনিও তাদের আমলের সমান সাওয়াব পাবেন ইনশাআল্লাহ্।
.
কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “ভালো কাজের পথ প্রদর্শনকারী আমলকারীর সমপরিমাণ সাওয়াব পাবে, কিন্তু আমলকারীর সাওয়াবে কোনো ঘাটতি হবে না।…” [মুসলিম ২৬৭৪]
নীচের আমলগুলো অবশ্যই করুন
১) সময়মত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করুন। পুরুষগণ জামায়াতে পড়ুন। ফজর ও ইশার নামাজ মসজিদে জামায়াতে পড়লে সারা রাত ইবাদতের সওয়াব পাবেন। ২/৪/৬/৮/১০ রাকাত, যে যতটুকু পারেন রাতে, বিশেষত সেহরি খেতে উঠে নফল নামাজ পড়ুন।
২) কিছু না কিছু দান করুন এবং অন্যকে দান করতে উৎসাহিত করুন। কেউ একান্ত না পারলে সামান্য টাকা হলেও দান করুন। মহিলারা নিজেদের জমানো টাকা থেকে দান করুন। একান্ত না পারলে সামান্য চাল, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন বা অন্য যেকোনো কিছু দান করুন।
৩) যত বেশি পারেন মানুষের উপকার করার চেষ্টা করুন। আল্লাহর নিকট ঐ ব্যক্তিই সবচেয়ে বেশি প্রিয় যে মানুষের সবচেয়ে বেশি উপকার করে।
৪) সকল মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করুন। আমাদের ব্যবহারে কেউ যেন কষ্ট না পায়।
৫) যে যতটুকু পারেন কুরআন তেলাওয়াত করুন। একান্ত না পারলে ৩ বার সূরা ফাতিহা, ১০ বার সূরা ইখলাস পড়ুন।
৬) বেশি বেশি তওবা ইস্তেগফার করুন। যত বেশি পারেন এই দুআ পড়ুন- ” আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা আফুআন্নি”- হে আল্লাহ, আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন, আমাকে ক্ষমা করে দিন।
৭) জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাত চেয়ে আল্লাহ তা’ আলার নিকট বেশি বেশি দুআ করুন ।
৮) যতবার পারেন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর দূরুদ শরীফ পড়ুন।
রমজানের শেষ দশ দিনের মধ্যে যে কোন দিন শবে কদর হয়ে যেতে পারে। তাই শবে কদরের রাত মিস করতে না চাইলে, বিশেষ করে বিজোড় রাতে এই আমল গুলো করুন।
আল্লাহ্ আমাদের আমল করার তৌফিক দিন।আমিন।