রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকে দুঃখ-কষ্টে ফেলেন।”
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَلَـنَبۡلُوَنَّكُمۡ بِشَىۡءٍ مِّنَ الۡخَـوۡفِ وَالۡجُـوۡعِ وَنَقۡصٍ مِّنَ الۡاَمۡوَالِ وَالۡاَنۡفُسِ وَالثَّمَرٰتِؕ وَبَشِّرِ الصّٰبِرِيۡنَۙ ١٥٥
তোমাদেরকে ভয় ও ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফল-ফসলের ক্ষয়-ক্ষতি (এসবের) কোনকিছুর দ্বারা নিশ্চয়ই পরীক্ষা করব, ধৈর্যশীলদেরকে সুসংবাদ প্রদান কর।
তাফসীর
কোন বিপদে পতিত হওয়ার আগেই যদি সে সম্পর্কে সংবাদ দিয়ে দেয়া হয়, তবে সে বিপদে ধৈর্যধারণ সহজতর হয়ে যায়। কেননা, হঠাৎ করে বিপদ এসে পড়লে পেরেশানী অনেক বেশী হয়। যেহেতু আল্লাহ্ তা’আলা সমগ্র উম্মতকে লক্ষ্য করেই পরীক্ষার কথা বলেছেন, সেহেতু সবার পক্ষেই অনুধাবন করা উচিত যে, এ দুনিয়া দুঃখ-কষ্ট সহ্য করারই স্থান। সুতরাং এখানে যেসব সম্ভাব্য বিপদ-আপদের কথা বলা হয়েছে, সেগুলোকে অপ্রত্যাশিত কিছু মনে না করলেই ধৈর্যধারণ করা সহজ হতে পারে। পরীক্ষায় সমগ্র উম্মত সমষ্টিগতভাবে উত্তীর্ণ হলে পরে সমষ্টিগতভাবেই পুরস্কার দেয়া হবে; এছাড়াও সবর-এর পরীক্ষায় ব্যক্তিগত পর্যায়ে যারা যতটুকু উত্তীর্ণ হবেন, তাদের ততটুকু বিশেষ মর্যাদাও প্রদান করা হবে।
মূলত: মানুষের ঈমান অনুসারেই আল্লাহ্ তা’আলা মানুষকে পরীক্ষা করে থাকেন। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “সবচেয়ে বেশী পরীক্ষা, বিপদাপদ-বালা মুসিবত নবীদেরকে প্রদান করেন। তারপর যারা তাদের পরের লোক, তারপর যারা এর পরের লোক, তারপর যারা এর পরের লোক।” [মুসনাদে আহমাদ: ৬/৩৬৯] অর্থাৎ প্রত্যেকের ঈমান অনুসারেই তাদের পরীক্ষা হয়ে থাকে। তবে পরীক্ষা যেন কেউ আল্লাহর কাছে কামনা না করে। বরং সর্বদা আল্লাহর কাছে নিরাপত্তা কামনা করাই মুমিনের কাজ।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক লোককে বলতে শুনেছেন যে, “হে আল্লাহ! আমাকে সবরের শক্তি দান কর। তখন তিনি বললেন, তুমি বিপদ কামনা করেছ, সুতরাং তুমি নিরাপত্তা চাও।” [মুসনাদে আহমাদ: ৫/২৩১,২৩৫] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন, মুমিনের উচিত নয় নিজেকে অপমানিত করা। সাহাবায়ে কিরাম বললেন, কিভাবে নিজেকে অপমানিত করে? রাসূল বললেন, এমন কোন বালা-মুসিবতের সম্মুখীন হয় যা সহ্য করার ক্ষমতা তার নেই”। [তিরমিযী: ২২৫৪]